দ্রবণ-মিশ্রণ
মিশ্রণ আসলে কি?একসাথে কিছু পদার্থকে একসাথে মিশানো বলে সাধারণত।সমুদ্রের বালির মধ্যে নুড়ি-পাথরের উপস্থিতও এক ধরণের মিশ্রণ।আবার, এই মুহূর্তে আপনার হাতে এক কাপ চা থাকলে, সেই চাও কিন্তু একটা মিশ্রণ।বলা যায়, আমরা নিজেরাও একটা মিশ্রণ টাইপর।আবেগে চোখ থেকে পানি বের হয়, তাও একটা মিশ্রণ।
এখন প্রশ্ন হল, মিশ্রণ আর দ্রবণের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?দুইটা আলাদা জিনিস?এক হলে কিভাবে এক?
এই নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের মিশ্রণ সম্পর্কে আরো জানতে হবে।মিশ্রণ মূলত দুই ধরনেরঃ
১।হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ
২।হোটারোজেনিউয়াস মিশ্রণ
হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ – হোটারোজেনিউয়াস মিশ্রণ এর মধ্যে পার্থক্য কি?
এক কথায় , যেসব নমুনায় উপাদানসমূহের অনুপাত সমস্ত নমুনায় একই থাকে, তাকে হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ বলে।যেমনঃএক গ্লাস শরবতে পানি আর চিনির অনুপাত সমস্ত গ্লাসে একই থাকবে।কিংবা,এক স্থানের বাতাসের উপাদানগুলোর অনুপাত একই থাকবে।আবার লোহার সঙ্কর স্টিল একটি হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ।
অন্যদিকে,যেসব নমুনায় উপাদানসমূহের অনুপাত সমস্ত নমুনায় একই থাকে না,বরংএকই নমুনার ভিন্ন যায়গায় ভিন্ন থাকে, তাকে হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ বলে।যেমনঃ বালির সাথে পাথরের মিশ্রণ যা সমুদ্রতীরে পাওয়া যায়।এখানে পাথরের অনুপাত বালির বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনুপাতে।আবার যদি পুরো প্রশান্ত মহাসাগরটাই ধরি,তাহলে দেখা যাবে,তাতে বিভিন্ন কঠিন পদার্থ আছে, জীবন্ত প্রাণী আছে, যা ক্রমাগত অবস্থান পরিবর্তন করছে।একটা হোটারোজেনিউয়াস মিশ্রণের সৃষ্টি করছে।যদিও সাগরের লবণাক্ত পানি হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ, কিন্তু অন্যান্য উপাদান যা সাগরে থাকে, তার কারণে হোটারোজেনিউয়াস মিশ্রণে পরিণত হয়েছে।
এখন আশা যাক দ্রবণে।দ্রবণ হল এক বিশেষ ধরণের হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ।যেখানে দ্রবের অনুপাত সমস্ত দ্রাবকে একই থাকে।এখানে ,উপাদানসমূহ খালি চোখে দেখা যায় না।
দ্রবণের ক্ষেত্রে কোন সাধারণ উপায়ে উপাদানসমূহ আলাদা করা যায় না।যেমন, ছাঁকন,সেন্ট্রিফিউজ।আবার, হোমোজেনিউয়াস মিশ্রণ হওয়ার কারণে দ্রবণ যেকোনো এক অবস্থায় থাকে(কঠিন,তরল,গ্যাস) যদিও দ্রব আর দ্রাবকের অবস্থা ভিন্ন হতে পারে।যেমনঃ শরবত তরল, কিন্তু পানি তরল হলেও চিনি কঠিন পদার্থ।
দ্রবণে যে উপাদান পরিমাণে বেশি থাকে বলা হয় দ্রাবক।আর , যা পরিমাণে কম থাকে, তাকে বলা হয় দ্রাব।
তো আমরা বুঝলাম, সকল দ্রবণ মিশ্রণ হলেও সকল মিশ্রণ দ্রবণ নয়।
ছবিটা দেখলে আরও ভাল করে বুঝা যাবে!
0 Comments